নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা এর সহজ এবং প্রথম একটি শর্ত হল নতুন একটি কম্পিউটার ক্রয় করা। কম্পিউটার ক্রয় করার পর নেট কানেকশন সংযোগ দিয়ে টেক টিউনস এর এই কম্পিউটার শিক্ষা টিউটোরিয়াল ব্লগের ৩০টি ডে পর্যন্ত পর্যাপ্ত প্রাকটিস করার মাধ্যমে অনুসরন করা।
তো আজকের ডে ১ অব ৩০ এর লেসনটি হলো একটা ইন্ট্রো ক্লাস। আপনি কি করবেন না করবেন তা আপনার ডিসিশনের উপর ছেড়ে দিলাম। আমি শুধু আমার জায়গা থেকে আপনাকে বলব যে, আপনি কম্পিউটারের ব্যাসিক হলেও শিখে নেন। অদূর ভবিষ্যতে আজকের কম্পিউটার শিক্ষা আপনার কাজে লাগবে।
সবার জন্য কম্পিউটার শিক্ষাকম্পিউটার শিক্ষা লাভ করার প্রয়োজনীয়তা?
কম্পিউটার শিক্ষা করার বিষয়টি আজকাল খুব জরুরী হয়ে গেছে। আপনি কম্পিউটার জানেন না কিন্তু ডিগ্রি পাশ করে করপোরেট জব খুজছেন। কিন্তু জব তো মিলছে না। কারণ আপনি কম্পিউটারের ব্যাসিক শিক্ষা ও ভালো করে শিখেন নাই। কম্পিউটার শুধু আজকাল কর্পোরেট জবের জন্যই লাগে না। পাড়ায় মহল্লায় শোরুম, সেলস, সার্ভিস যেখানেই আপনি জব করেন না কেন সেখানেই কম্পিউটারের ব্যবহার প্রতিনিয়ত হচ্ছে। এবং এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনি যদি পড়াশুনা শেষে ব্যবসাও করতে নামেন, তখন সেখানে আপনার ব্যবসার ইনভেন্টরি হিসাব রাখার জন্য খাতার চেয়ে কম্পিউটার এ হিসাব রাখা অনেক সহজ হবে।
তার উপর যদি আপনি অনলাইনে রিমোট জব করেন বা অনলাইনে ফেসবুকে আপনার ব্যবসা চালু করবেন। তাহলে তো কোন কথাই নেই। আপনাকে সর্ব অবস্থায় কম্পিউটারে আপনার বিজনেসের হিসাব রাখতে হবে। কাস্টমারের অর্ডার রিসিভ, ডেলীভারি টাইম, ইত্যাদি কাজগুলোতে আজকাল কম্পিউটার ছাড়া চলেই না। তাই আপনাকে কম্পিউটার শিখতেই হবে। আপনি হয়ত আগে যেখানে কাজ করছেন কম্পিউটার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু দেখা যাবে আপনার কোম্পানী ৬ মাাস পরে কম্পিউটারের গুরুত্ব বুঝতে পেরে আপনাকে কম্পিউটারে রিপোর্ট করতে বলবে।
তাহলে একটা সত্য ঘটনা বলি, আমার অফিসে প্রোডাকশন ম্যানেজারদের জন্য নতুন কম্পিউটার পাঠিয়েছে এবং প্রোডাকশন ইনচার্জদের জন্য দিয়েছে ট্যাব। প্রতি ঘন্টায় কত প্রডাকশন হয় তা রিপোর্ট করার জন্য। ইনচার্জ লেবেলের এনাদের একটা নির্দিষ্ট সফ্টওয়্যারে নির্দিষ্ট প্রসেসে ইনপুট কীভাবে দিতে হবে, তা কোম্পানী ট্রেইনিং এর মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়েছে।
কিন্তু বেচারা প্রোডাকশন ম্যানেজারদের তো রিপোর্ট করতে হবে মাইক্রোসফ্ট এক্সেল বা ওয়ার্ডে। তাদের তো কোম্পানী ট্রেইনিং দিবে না। কারণ এটা সবাই পারে এটা কোম্পানীর ধারণা। কিন্তু প্রোডাকশন ম্যানেজাররা তো আর ইন্সট্যান্ট কম্পিউটার এ রিপোর্ট করতে পারবে না। আবার শিখার সময়ও খুব কম। তো তারা কী করল? কম্পিউটার অপারেট করতে পারে এমন একটি নতুন ছেলে নিল সহকারী হিসেবে। কিন্তু সে কাজ করে কম্পিউটারে এবং প্রোডাকশন ম্যানেজারদের কাজ সে করে দেয়। এই হল অবস্থা। তো আপনি কি চান আপনার অবস্থাও এমন হোক? আমিতো অবশ্যই চাইবো না।
কম্পিউটার অপারেট করা কিন্তু খুব কঠিন কিছু না। এটি খুবই সহজ। যদি আপনার একটি পার্সোনাল কম্পিউটার থাকে তাহলে আজকে থেকেই প্রতিদিন ৩০ মিনিট থেকে ১২০ মিনিট সময় দিয়ে আপনিও ১ মাসের মধ্যে কম্পিউটার অপারেট করতে পারবেন। ইন্টারভিউতে গেলে আর বলতে না বলতে হবে না। সবগুলোর উত্তরই হ্যাঁ সূচক দিতে পারবেন।
আপনি যদি সত্যিই কম্পিউটার চালানো শিখতে চান তাহলে আপনি আমার এই ব্লগটি অনুসরণ করতে পারেন। এই ব্লগে আপনাকে আমি ৩০ দিনে কম্পিউটারের অপারেটর বানিয়ে দিব, যদি আপনি আমার প্রত্যেকটি গাইডলাইন মেনে চলেন। কারণ এর আগে আমি এই একই আইডিয়া দিয়ে আমার কাজিনকে কম্পিউটারের ব্যাসিক শিখিয়ে দিয়েছি। শুধু তাদেরকে বলেছি কিভাবে কি করতে হবে, এবং কোনটার পর কোনটা করতে হবে। তারা হয়তো মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়েছে। আমি তখন ইন্সট্যান্ট না পারলেও রাতের অফিস শেষে তাদেরকে এনিডেস্ক বা টিমভিউয়ার দিয়ে হেল্প করেছি।
নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা ৩০ দিনে আপনি কী কী শিখতে পারবেন?
- না দেখে ইংরেজী টাইপ করা
- না দেখে বা দেখে মোটামুটি বাংলা টাইপ করা।
- ইন্টারনেট ব্রাউজ করা
- গুগল বা অন্য কোন ওয়েব সাইট থেকে ইমেজ ডাউনলোড করা।
- ফেসবুক থেকে ভিডিও ডাউনলোড করা।
- ইউটিউব থেকে ভিডিও ডাউনলোড করা।
- কম্পিউটারের কন্ট্রোল প্যানেল কি তা সম্পর্কে জানা।
- যে কোন সফ্টওয়্যার ইন্সটল করা।
- সফ্টওয়্যার আনইন্সটল করা।
- ইন্টারনেট থেকে pdf বই ডাউনলোড করা।
- মাইক্রোসফ্ট অফিস ওয়ার্ড এ কাজ করতে পারা।
- মাইক্রোসফ্ট অফিস এক্সেল এ কাজ করতে পারা।
- Anydesk বা TeamViewer এ রিমোটলি কাজ করা।
- ইত্যাদি
আজকে শুধু ইন্ট্রো ছিল। আপনি যদি নিজেকে দৈনিক ২ ঘন্টা সময় দিয়ে কম্পিউটার অপারেট করা শিখতে চান বা আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন, তাহলে এখন থেকেই এই কোর্স অনুসরণ করুন।
নতুনদের জন্য কম্পিউটার কিনা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
লেখার শুরুতেই বলেছি কম্পিউটার শিক্ষা লাভ করার জন্য প্রথমত আপনার একটি নিজস্ব কম্পিউটার থাকতে হবে। তা যেই দামেরই হোক না কেন? ১০ হাজার বা ৫০ হাজার!! শুধু ইন্টারনেট ব্যবহার ও বাকি প্রোগ্রামগুলো ঠিকঠাক মত কাজ করলেই হলো। এখনতো তাহলে আপনি মনে হয় সমস্যায় পড়ে গেছেন। কম্পিউটার শিখার জন্য আপনি ভেবেছিলেন কোন ইন্সটিটিউটে ভর্তি হবেন। ২ হাজার বা ৫ টাকা খরচ করে কম্পিউটার চালানো শিখবেন। তারপর কম্পিউটার কিনবেন। কিন্তু আপনার এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল আমি বলব না, বলব অনেকটা ভুল। কেন ভুল সেটা বুঝিয়ে বলছি।
ধরুন, আপনি আমার কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোর্সে ৩ হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হলেন। আমার এখানে আমি আপনাকে ১-২ ঘন্টা আমার ইন্সটিউটের কম্পিউটারটি ব্যবহার করে কাজ শিখাবো। আপনি কাজ শিখলেন। কিন্তু বাসায় গিয়ে প্রাকটিস করতে পারলেন না। তখন কি হবে, আপনি আমার থেকে কাজটা বুঝেছেন বা আমি যতটুকু শিখিয়েছি ততটুকু আপনি শিখেছেন ঠিকই, কিন্তু নিয়মিত অনুশীলন না করতে পারার কারণে আপনি দিনে দিনে কোর্সের শুরুর দিকের কাজ গুলি ভুলে যেতে লাগলেন। তাহলে ফলাফল কি দাড়ালো? আপনি হয়তো বড়জোর কোর্স এর ৩০% মনে রাখতে পারবেন।
অন্যথায় আপনার যদি নিজস্ব কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকতো তাহলে আপনি আমার কম্পিউটার শিক্ষা কোর্সের থেকে প্রতিদিন যা শিখতেন তাই বাসায় অনুশীলন করতে পারতেন। এবং আমি যা শিখাতাম আপনি চাইলে তার থেকেও বেশী করে শিখতে পারতেন। এবং আমাকে নগদ নগদ নতুন কিছু জানার জন্য প্রশ্ন করতে পারতেন। তাই বললাম, কম্পিউটার যদি নিজের থাকে তাহলে কম্পিউটার শিক্ষার বিষয় টা আরও বেশী সহজ হতো।
তাই কম্পিউটার শিক্ষা কোর্স করার পূর্বে আমি আপনাকে অবশ্যই বলবো একটি নিজস্ব কম্পিউটার ক্রয় করার জন্য। যদি সেটা সেকেন্ড হ্যান্ডও হয় ১০ হাজার টাকার ভিতর মনিটর সহ কম্পিউটার পাওয়া যায় অনেক দোকানে। যদি বাজেট কম বা বেশি নিয়ে চিন্তা করেন যে কি কম্পিউটার কিনব তাহলে আমার সাথেও যোগাযোগ করতে পারেন। আমি চেষ্টা করবো আপনাকে কম্পিউটার ক্রয় করার বিষয়ে সাহায্য করার জন্য।
কম্পিউটার শিক্ষা কোর্সটি করার জন্য আপনার কী কী লাগবে?
- আপনার ইচ্ছা
- সচল ব্যাক্তিগত কম্পিউটার বা ল্যাপটপ
- ইন্টারনেট কানেকশন
- মাউস
- কিবোর্ড
- ব্রাউজার